এক পায়ে লাফিয়ে এক কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে স্কুলে যায় সুমাইয়া

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » এক পায়ে লাফিয়ে এক কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে স্কুলে যায় সুমাইয়া
রবিবার, ২১ আগস্ট ২০২২



---

এক পায়ে লাফিয়ে প্রতিদিন এক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে স্কুলে যাওয়া-আসা করে সুমাইয়া। তবু লেখাপড়া ছাড়ে না সে। বয়স মাত্র ১০ বছর। এর মধ্যেই জীবন অনেকটাই কঠিন হয়ে উঠছে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার স্কুলছাত্রী সুমাইয়ার কাছে।

দুই বছর বয়সের সময় রাস্তায় পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনায় তার বাম পা বিকলাঙ্গ হয়ে যায়। কিন্তু ‘প্রতিবন্ধী’ তকমা নিয়ে থেমে যেতে সে রাজি নয়। তাই এক পায়ে ভর দিয়েই রোজ স্কুলে যায় সুমাইয়া। এ জন্য তাকে আসা-যাওয়া মিলিয়ে দুই কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিতে হয় প্রতিদিন।

চিরিরবন্দর উপজেলার আলোকডিহি ইউনিয়নের আলীপাড়ার রিকশা চালক পরিবারের সন্তান সুমাইয়া স্বপ্ন বড় হয়ে সে ডাক্তার হবে। কিন্তু তার এই অদম্য ইচ্ছা শক্তি কতদূর নিয়ে যাবে বিকলাঙ্গ পা নিয়ে। জন্মের দুই বছর পরেই তাকে তার একটি পা হারাতে হয়েছে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উত্তর আলোকডিহি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া রোজ এক কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিয়ে স্কুলের নির্দিষ্ট সময়ে হাজির হয়। ছোট্ট মেয়েটির এভাবে স্কুলে যাওয়ার অনুপ্রেরণামূলক দৃশ্য দেখে হতভাগ হয়ে যায় এলাকাবাসী। বই ভর্তি একটি ভারী ব্যাগ নিয়ে তার এই স্কুলে যাওয়ার দৃশ্য যেন মানুষের অন্তরে নাড়া দেয়।

সুমাইয়ার বাবা বলেন, ‘এই আট বছরে অনেক চিকিৎসা করেছি কিন্তু কোন ফল পাইনি। অর্থোপেডিক ডাক্তাররা বলেছেন অনেক টাকা হলে তোমার মেয়ের পা ভালো করা সম্ভব। কিন্তু আমার পক্ষে রিকশা চালিয়ে এতো টাকা খরচ করা সম্ভব না।’

সুমাইয়ার বাবা আরও বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন যাবত ঢাকায় রিকশা চালাই। আমার এক ছেলে, দুই মেয়ে সুমাইয়া। আমার মেজো মেয়ে। অভাবের সংসার তাই বাড়ির বাইরে থাকতে হয়। বাড়িতে হয়তো থাকলে কোলে নিয়ে স্কুলে যাওয়া-আসা করতাম। তার এভাবে স্কুলে যাওয়া-আসা দেখে আমাদের এক বুক পাহাড় সমান কষ্ট হয়। ডাক্তার বলেছে, তিন লাখ টাকা হলে তাকে ভালো করা সম্ভব। তাই আমি আমার মেয়ের চিকিৎসার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। বিকাশ পার্সোনাল-০১৮৩৬৪৬৬৬৭০।

সুমাইয়ার মা সুমি আক্তার বলেন, ‘মেয়ে যখন স্কুলে যায়, তখন তার খুড়ে খুড়ে যাওয়ার এই দৃশ্য দেখে আমি মা হয়ে আর সহ্য করতে পারি না। চোখের পানি ধরে রাখতে পারি না। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা আমার মেয়ে সুমাইয়া যেন সুস্থ হয়ে যায়। স্বাভাবিক সবার মত দুই পা দিয়ে হেঁটে চলতে পারে।

উত্তর আলোকডিহি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামনুর রশিদ বলেন, ‘১০ বছরের সুমাইয়ার কাজ আমাদের আবেগপ্রবণ করে তুলেছে। চিকিৎসার অভাবে যেন তার ভবিষ্যৎ অন্ধকারে চলে যাচ্ছে। সুমাইয়ার পড়াশুনা খুবই ভালো। আমরা তাকে মানুষের মত মানুষ হিসেবে দেখতে চাই। সুমাইয়া আমাদের সকলের জন্য অনুপ্রেরণা। দেশের প্রতিটি শিশু সুশিক্ষা চায়। সুমাইয়া সুশিক্ষা অর্জন করে অনেক বড় হোক, আমরা তার জন্য এই কামনায় করি।’

বাংলাদেশ সময়: ১৩:২৩:২৮   ১০৬ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


ঝিনাইদহে দুই বাসের সংঘর্ষ, আহত ১৫
সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন অনু কাপুর
নোয়াখালীতে সরকারি আবাসিক ফ্ল্যাটের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় চালু হচ্ছে আর্জেন্টিনার দূতাবাস
টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নাসিরের ঢাকা
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরসার কমান্ডারসহ গ্রেফতার ৫
বাজারে আসছে স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২৩ সিরিজের ফোন
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যপ্রাচ্য সফর শুরু
রবীন্দ্রনাথের গল্প ও সুর মানুষকে সঠিক পথ দেখিয়েছে - খাদ্যমন্ত্রী
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালকের শ্রদ্ধা

আর্কাইভ