রংপুর শহরে ছুটির দিনেও রেস্তোরাঁয় ভিড় কম ছিল

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » রংপুর শহরে ছুটির দিনেও রেস্তোরাঁয় ভিড় কম ছিল
শনিবার, ১৩ আগস্ট ২০২২



---

রংপুর নগরের সুরভি উদ্যান ও রংপুর সরকারি কলেজের সড়কের পাশে সারি সারি স্ট্রিটফুডের দোকান। এখানকার চটপটি, ফুচকা আর মুখরোচক নানা খাবার নগরের ছোট-বড় সবার প্রিয়। ছুটির দিন সকাল থেকেই সেখানে ভিড় জমে। কিন্তু গতকাল শুক্রবার সে ভিড় চোখে পড়েনি। বিক্রেতারা বলছেন, সব জিনিসের দাম বাড়তি। তাই খরচ কমাতে হয়তো লোকজন বাইরে ঘোরা বা খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন।

নগরের ১০ জন বাসিন্দা ও হোটেল মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারি ছুটির দিনে অনেকে বাইরে ঘুরতে যায়। একটু ভিন্ন পরিবেশে পরিবার–পরিজনকে নিয়ে রেস্তোরাঁর খাওয়ার অভ্যাস গড়ে উঠলেও সেই আনন্দেও এখন টান পড়েছে। খাবারের দাম বেড়েছে। ফলে খাবারের দোকানে ক্রেতার ভিড়ও কমছে। কমছে বিক্রিবাট্টা।

সুরভি উদ্যানের পাশের স্ট্রিটফুডের দোকানগুলোতে গতকাল বেলা ১১টার দিকে তেমন একটা ক্রেতা ছিলেন না। মালিক-কর্মচারীরা দোকানের সামনে বসে আছেন। কনা ফুচকা হাউসের শিমুল ইসলাম বলেন, নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন পদের খাবারের দাম ১০ টাকা করে বেড়েছে। ছুটির দিন আগে ভিড় লেগে থাকত। সেখানে গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্রেতা নেই বললেই চলে। বিকেল থেকে হয়তো ক্রেতা আসবেন। দাম বাড়লেও বিক্রি কমে গেছে। এতে করে খুব একটা লাভ হচ্ছে না।

সুরভি উদ্যানের সামনে মামা ফুচকা হাউসে একটি পরিবারের তিন সদস্য ফুচকা খাচ্ছিলেন জেলার কাউনিয়া উপজেলা থেকে শহরে ঘুরতে এসেছেন ব্যবসায়ী আবদুল কুদ্দুস। তিনি বলেন, ‘আগে প্রতি সপ্তাহে শুক্রবার শহরে ঘুরতে এসে ভালো খাবারের দোকানে খাওয়া হতো। কিন্তু এখন এক মাসেও হয়তো একবার আসা হবে না। পরিবহন ভাড়া বেড়েছে। খাবারের দাম বেড়েছে। কিন্তু আমাদের আয়–রোজগার তো বাড়েনি।’

নগরের মেডিকেল মোড়, ধাপ, সেন্ট্রাল রোড, কাচারি বাজার, কলেজ রোডসহ আরও কিছু এলাকায় নতুন নতুন রেস্তোরাঁ হয়েছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে সেখানেও ক্রেতার সংখ্যা কমছে। নগরের মেডিকেল মোড়ের পাশে ‘ঠিকানা’ হোটেল ও রেস্তোরাঁ। নানা পদের বিরিয়ানি, বোরহানি, নান রুটি; খাসি, মুরগি ও গরুর কাবাব, শাহি পরোটা এ রেস্তোরাঁর মূল আকর্ষণ। দুপুরের দিকে সেখানে গিয়ে দেখা গেল অধিকাংশ আসন খালি।

রেস্তোরাঁর মালিক মশিউর রহমান বলেন, এখন শুধু রাতে ভিড় বেশি হয়। খাবারের দাম বেড়েছে, সেই সঙ্গে ক্রেতার উপস্থিতিও আর আগের মতো নেই। মুরগির কাবাব ও শাহি পরোটার দাম বেড়েছে। সেই সঙ্গে প্রকারভেদে ২০ থেকে ৩০ টাকা দাম বেড়েছে বিরিয়ানিরও। নিত্যপণ্যের দাম যেভাবে বেড়েছে, তাতে খাবারের দাম খুব একটা বাড়ানো হয়নি। কিন্তু ক্রেতা কমে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, দুই সপ্তাহ আগে প্রতিদিন বিক্রি হতো দুই লাখ টাকার ওপরে। কিন্তু সেই বিক্রি এখন প্রায় ৭০ হাজার টাকা কমে গেছে। কিন্তু মাস শেষে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা দোকান ভাড়া দিতে হয় মালিককে। তার ওপর প্রতি মাসে কর্মচারীদের বেতন ১০ লাখের ওপর পরিশোধ করতে হয়। অনেক পরিবারের জীবন চলছে একটি রেস্তোরাঁ থেকে। এসবের তো কেউ খোঁজ রাখে না। সবাই শুধু দেখে খাবার দাম বাড়ানো হয়েছে।

স্কুলশিক্ষক রেহানা আক্তার সপ্তাহে এক দিন বাইরে খেতেন। তিনি বলেন, বাড়িতে নিজের রান্না খেতে খেতে একটু ভিন্ন স্বাদ পেতে কে না চায়। কিন্তু সেটি আর সম্ভব হয়ে উঠছে না। প্রতি সপ্তাহে দূরের কথা, এখন মাসেও একদিন যাওয়া সম্ভব হয়ে উঠবে না। বাড়তি খরচ পুষিয়ে নিতে শখ কাটছাঁট করতে হচ্ছে।

দুপুরের দিকে শহরের ব্যস্ততম কাচারি বাজারের ঐতিহ্যবাহী মৌবন রেস্তোরাঁয় গিয়ে দেখা গেল দু-চারজন করে ক্রেতা আসছেন। তারাও হালকা খাবার খেয়ে বের হচ্ছেন। হোটেলের কর্মচারীরাও অলস সময় পার করছেন। রেস্তোরাঁর ব্যবস্থাপক আমিনুর ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিন বিক্রির হিসাবটা না বলাই ভালো। তবে আগের থেকে অর্ধেক বিক্রি। ক্রেতারাও এখন হিসাব করে খাচ্ছেন।’

বাংলাদেশ সময়: ১৫:৫২:১১   ১৭৩ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


ঝিনাইদহে দুই বাসের সংঘর্ষ, আহত ১৫
সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন অনু কাপুর
নোয়াখালীতে সরকারি আবাসিক ফ্ল্যাটের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় চালু হচ্ছে আর্জেন্টিনার দূতাবাস
টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নাসিরের ঢাকা
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরসার কমান্ডারসহ গ্রেফতার ৫
বাজারে আসছে স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২৩ সিরিজের ফোন
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যপ্রাচ্য সফর শুরু
রবীন্দ্রনাথের গল্প ও সুর মানুষকে সঠিক পথ দেখিয়েছে - খাদ্যমন্ত্রী
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালকের শ্রদ্ধা

আর্কাইভ