দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি এড়াতেই সাময়িক লোডশেডিং: হানিফ

প্রথম পাতা » চট্রগ্রাম » দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি এড়াতেই সাময়িক লোডশেডিং: হানিফ
শনিবার, ২৩ জুলাই ২০২২



---

খরচ কমিয়ে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি থেকে জনগণকে রক্ষার জন্যই লোডশেডিং করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ।

তিনি বলেন, মহামারি করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। ডলার, ইউরোর দাম বাড়ছে-কমছে। তার ঢেউ বাংলাদেশেও লেগেছে। দেশে অর্থনৈতিক মন্দা যাতে দীর্ঘমেয়াদি না হয়, জনগণ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্যোগ নিয়েছেন।

শনিবার সকালে কুমিল্লার মেঘনা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয়েছে এরপরও লোডশেডিং হয় কেন? বিএনপি নেতাদের এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন রেখে গিয়েছিল। বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে এক মেগাওয়াট বিদ্যুৎও উৎপাদন করতে পারেনি। তারা মানুষকে শুধু খাম্বা দিয়েছিল। আর এখন বড় বড় কথা বলেছে। তাদের তো লজ্জা হওয়া উচিত।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে মিথ্যাচারের রাজনীতি পরিহার করার আহবান জানিয়ে হানিফ বলেন, মির্জা ফখরুল বলছেন বর্তমান সরকারের উন্নয়ন ধারাবাহিকতার অংশ। আপনারা কোন উন্নয়নের ধারাবাহিকতা সৃষ্টি করেছিলেন। জিয়াউর রহমান, এরশাদ, খালেদা জিয়া রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিলেন। তারা এমন কোনো উন্নয়ন কাজ করেছেন। উন্নয়নের একটা নজির দেখানোর জন্য বলেছিলাম। একটাও দেখাতে পারেননি। তারা হাওয়া ভবন বানিয়ে লুটপাট করেছেন। আর এখন প্রতিদিন দুর্নীতির ভাঙা রেকর্ড বাজাচ্ছেন।

বিএনপি নেতাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের রিজার্ভ নাকি সবচেয়ে নিম্ন পর্যায়ে। আপনাদের সময়ে কত ছিল? এই সংকটের সময়েও দেশের রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলার। ২০০৬ সালে বিএনপির সময় ছিল সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলার। তারেক রহমান দুর্নীতি, সন্ত্রাস, হত্যা ও খুনের দায়ে বিদেশে পলাতক। বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের কলকাঠি নাড়ছে। হাওয়া ভবন, খাওয়া ভবন বানিয়ে দেশে লুটপাট করেছে। এখন তারা সরকারের বিরুদ্ধে নির্লজ্জ মিথ্যাচার করছেন। সার, বিদ্যুৎ না দিতে পেরে উল্টো গুলি করে মানুষকে হত্যা করেছে। কৃষি, বিদ্যুৎ খাতে ধস নেমেছিল। আজ আমরা কৃষিখাতে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এরপরও তারা কিভাবে মিথ্যাচার করে? মিথ্যাচার করতে আপনাদের লজ্জা হয় না? প্রশ্ন রাখেন তিনি।

হাওয়া ভবনের দুর্নীতি দেখে অভ্যস্ত বিএনপি নেতারা উন্নয়ন দেখেন না- এমন মন্তব্য করে হানিফ বলেন, দেশের রপ্তানি আয়, রেমিট্যান্স সবোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। কর্ণফুলী টানেল, পায়রা বন্দর, মাতারবাড়ি ডি সি পোর্টসহ অজস্র উন্নয়ন কর্মকান্ড হচ্ছে। বিএনপি নেতারা উন্নয়ন দেখে না, তারা দেখে শুধু দুর্নীতি। খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মাসাৎ মামলায় আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত। তার বিরুদ্ধে নাইকো, গ্যাটকো মামলাও আছে। যারা এতিমের টাকার লোভ সামলাতে পারেনি। বিএনপির সব নেতাই দুর্নীতিবাজ। তারা আজ সরকারের দুর্নীতি খুঁজে বেড়ায়।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি আমলে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল ৫০০ ডলার। আজ ২৯শ ডলারে পৌঁছে গেছে। আমরা উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পৌঁছে গেছি। আর ৬শ-৭শ’ ডলার হলে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হব। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০৩১ সালের আগেই আমরা মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হব।

পদ্মা সেতু শুধু ইট পাথরের সেতু নয়, বরং অন্যায়ের বিরুদ্ধে জয় এবং ন্যায়ের প্রতীক মন্তব্য করে হানিফ বলেন, বিশ্বব্যাংক মিথ্যা অভিযোগে অর্থায়ন প্রত্যাহার করেছিল। কানাডার ফেডারেল কোর্ট প্রমাণ না পেয়ে বলেছে এ অভিযোগ ফেক ছিল। শেখ হাসিনার সরকারকে হেয় করার জন্য মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হয়েছিল। শেখ হাসিনা বলেছিলেন নিজ অর্থে পদ্মা সেতু হবে। দেখিয়ে দেব পারি কি না। আজ পদ্মা সেতু বাংলাদেশের সক্ষমতার প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। সারাবিশ্বে পদ্মা সেতু শেখ হাসিনার দৃঢ়তার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা থেকে শুরু করে সব অর্জন আওয়ামী লীগের হাত ধরে এসেছে। এখানে অন্য কারো ভাগ নেয়ার সুযোগ নেই। জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। আর বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশকে উন্নয়ন, অগ্রগতিতে রোল মডেলে পরিণত করেছেন।

তৃণমূলে দলকে সংগঠিত করা ও ঐক্যবদ্ধ রাখার আহবান জানিয়ে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য করে হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগের মূল শক্তি তৃণমূলের নেতা-কর্মী ও এদেশের জনগণ। আওয়ামী লীগ জনগণের সমর্থন ছাড়া কখনো ক্ষমতায় আসেনি। মানুষ যাতে কষ্ট না পায়, সাধারণ মানুষেরে সাথে ভালো ব্যবহার করুন। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা নিরলস পরিশ্রম করে দেশকে গড়ে তুলছেন। আপনার সরকারের উন্নয়ন মানুষের কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরুন। ভালো আচরণ করে মানুষের মন জয় করতে পারলে আগামী জাতীয় সংসদ নিবাচনে শেখ হাসিনা নিরঙ্কুশ বিজয় ক্ষমতায় আসবে ইনশাআল্লাহ।

ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী। ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ম. রুহুল আমিন।

সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাস্টার। মেঘনা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শফিকুল আলমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল শিকদারের সঞ্চালনায় বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি আবদুল মান্নান জয়, শেখ আবদুল আউয়াল, সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন শিশির, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পারভেজ হোসেন সরকার ও শ্রম বিষয়ক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম খন্দকার।

বাংলাদেশ সময়: ১৬:৩২:৩৪   ২১৪ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

চট্রগ্রাম’র আরও খবর


নোয়াখালীতে সরকারি আবাসিক ফ্ল্যাটের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরসার কমান্ডারসহ গ্রেফতার ৫
তালিকা যাচাই-বাছাই করে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আমাদের ছাপানো বইয়ের কাগজের মান খারাপ নয় : শিক্ষামন্ত্রী
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরিষার বাম্পার ফলনের আশা
কক্সবাজারকে নানন্দিক পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে সরকার : এনামুল হক শামীম
লুঙ্গিতে বাঁধা পোটলায় মিলল সাড়ে ৫ কোটি টাকার আইস
স্কুলছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে চট্টগ্রামে যুবক গ্রেপ্তার
শেখ হাসিনাকে হটাতে বাম-ডান একজোট হয়েছে : ওবায়দুল কাদের
নোয়াখালীতে ভোটগ্রহণ চলছে

আর্কাইভ