‘সিঙ্গুর থেকে টাটাদের সিপিআইএম তাড়িয়েছে, আমি নই’ বিস্ফোরক দাবি মমতার!

প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক » ‘সিঙ্গুর থেকে টাটাদের সিপিআইএম তাড়িয়েছে, আমি নই’ বিস্ফোরক দাবি মমতার!
বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর ২০২২



---

কলকাতার অদূরে সিঙ্গুরে টাটা গোষ্ঠী ন্যানো কারখানার জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টানা আন্দোলনের জেরে টাটা গোষ্ঠীর কর্ণধার রতন টাটা সাংবাদিক বৈঠক করে সিঙ্গুর থেকে কারখানা সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা করেছিলেন। ১৪ বছর পর সেই টাটা কারখানা সরানোর দায় এক্কেবারে নিজের ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর পুরো দায় চাপালেন বামফ্রন্টের কাঁধে। যদিও বামফ্রন্ট সরকারই শিল্পের জন্য জমি দিয়েছিল টাটাদের। যা নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক বিতর্ক।

কলকাতার পত্রপত্রিকা ঘাটলে দেখা যাবে, ৩ অক্টোবর ২০০৮ সালে টাটা গোষ্ঠীর কর্ণধার সাংবাদিক বৈঠকে সিঙ্গুরের টাটা কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেন এবং পরদিন কলকাতার প্রভাবশালী একটি বাংলা দৈনিকে প্রধান শিরোনাম করে যে ‘মমতার জন্যই সিঙ্গুর ছাড়লাম’ বললেন রতন টাটা।

এর আগে, সিঙ্গুরের টাটার কারখানার বন্ধের প্রতিবাদে ২০০৬ সালের ৬ ডিসেম্বর থেকে আমরণ অনশনে বসেছিলেন মমতা। টানা ২৫ দিন সেই অনশন ভাঙতে তৎকালীন রাজ্যপাল গোপাল কৃষ্ণ গান্ধীকেও ছুটে যেতে হয়েছিল অনশনস্থলে। তবে, ২৮ ডিসেম্বর অনশন ভাঙেন তৃণমূল নেত্রী। তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সাথে টাটা গোষ্ঠীর চুক্তি হয়েছিল প্রায় ১ হাজার জমির অধিগ্রহণের। সেই তৃণমূলের অভিযোগ ছিল, তিন ফসলি জমি দেওয়া হয়েছে টাটাদের।

২০০৮ সাল থেকে ২০২২ সাল; সময় অতিক্রম করেছে ১৪ বছর। এবার মমতা দাবি করলেন, তিনি টাটাদের তাড়াননি তাড়িয়েছে সিপিআইএম। কারণ বামফ্রন্ট জোর করে কৃষকদের কাছ থেকে জমি নিয়ে টাটাদের দিয়েছিলো। বুধবার উত্তরবঙ্গে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মমতার এমন দাবি, রীতিমত নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছ রাজ্য রাজনীতিতে ! মমতার এই দাবির পরই তার দিকে ধেয়ে আসছে বিরোধীদের তীব্র সমালোচনার বাণ।

বামফ্রন্ট নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, আসলে রাজ্য জুড়ে যেভাবে দুর্নীতির অভিযোগে তার ঘনিষ্ঠ মন্ত্রী-নেতারা জেলে ঢুকছেন তাতে মমতার মাথা কাজ করছে না। তাই এসব ভুল বকছেন। বিজেপি মুখপাত্র শমিক ভট্টাচার্য মনে করেন, শিল্পের জন্য কৃষকদের কাছ থেকে জোরজুলুম করে সিঙ্গুরের বামফ্রন্ট জমি অধিগ্রহণ করেছিল এটা সত্যি। ওই অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আমরাও পথে ছিলাম। কিন্তু টাটারা চলে যাওয়ার জন্য দায়ী তৃণমূল কংগ্রেস। ইতিহাস মিথ্যে হয়ে যায় না।

কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, আসলে এতো মিথ্যে কথা বলতে একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই পারেন। তাকে এখন মিথ্যের জন্য ইউনেস্কোর পুরস্কার দেওয়া উচিৎ। মমতার এই মন্তব্য নিয়ে যে আগামী কয়েক দিন রাজ্য রাজনীতি উত্তাল থাকবে সেটা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।

তবে এটা ঠিক যে, জমি অধিগ্রহণ পদ্ধতি যে বেআইনি ছিল সেটা দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে দেশটির শীর্ষ আদালত সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়। আর সে কারণেই টাটাদের কাছে অধিগৃহীত জমি পরবর্তীতে মমতার সরকার ফিরিয়ে নেয় এবং সেই জমি অনিচ্ছুক কৃষকদের মাঝে ফেরত দেওয়া হয়।

যদিও সেখানে আর কোনও চাষাবাদ হচ্ছে না। তৈরি করা হয়েছে মাছের ঘের। সেটা নিয়েও মমতার সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের তীব্র ক্ষোভ রয়েছে। ক্ষোভ রয়েছে সিঙ্গুরের শিল্পের জন্য স্বেচ্ছায় বিক্রি করে দেওয়া জমির মালিকদেরও।

বাংলাদেশ সময়: ৯:৩৪:৫৪   ৯৪ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আন্তর্জাতিক’র আরও খবর


মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যপ্রাচ্য সফর শুরু
ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা জোরদার করতে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতি আহ্বান ন্যাটো প্রধানের
নেতানিয়াহুর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল ইসরাইল
বিশ্বে করোনায় কমেছে মৃত্যু ও শনাক্ত
ইরানে ভূমিকম্পে নিহত ৩, আহত ৩ শতাধিক
পেরুতে বাস খাদে পড়ে নিহত ২৫
বিশ্বে করোনায় আরও ১০৬২ মৃত্যু, শনাক্ত বেড়েছে
কোরআন অবমাননা: সুইডেনকে সমর্থন না দেয়ার ঘোষণা তুরস্কের
ভারতের মহারাষ্ট্রে মাইক্রোবাস-ট্রাক সংঘর্ষে শিশুসহ নিহত ৯
ইউক্রেনকে ‘ভারী অস্ত্র’ সরবরাহ করতে যাচ্ছে ন্যাটো

আর্কাইভ