নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে জাতীয় সংসদকে সকল আলোচনার কেন্দ্রে পরিণত করতে হবে: আলোচনা সভায় বক্তারা

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে জাতীয় সংসদকে সকল আলোচনার কেন্দ্রে পরিণত করতে হবে: আলোচনা সভায় বক্তারা
শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২



---

আন্তর্জাতিক সিডও দিবসের আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, নারীর প্রতি সকল প্রকার সহিংসতা বন্ধ এবং সমঅধিকার প্রতিষ্ঠায় জাতীয় সংসদকে সকল সমস্যা সমাধানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করতে হবে।
আন্তর্জাতিক সিডও দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে ‘জাতিসংঘ সিডও কমিটির সমাপনী মন্তব্য (২০১৬) : বাস্তবায়ন পর্যালোচনা’ বিষয়ক এক কনসালটেশন সভায় বক্তারা আজ একথা বলেন।
আজ আন্তর্জাতিক সিডও দিবস। সিডও সনদের ৪১তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে রাজধানীর কবি সুফিয়া কামাল ভবনের আনোয়ারা বেগম-মুনিরা খান মিলনায়তনে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
বক্তারা বলেন, বর্তমান সরকার নারীবান্ধব অনেক আইন ও নীতি প্রণয়ন করেছে। তা সত্বেও সমাজে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ হয়নি। সমাজে নারী-পুরুষের সম অধিকার প্রতিষ্ঠায় এখনও নানা বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা সিডও সনদের পূর্ণ অনুমোদনের জন্য নীতিনির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক দৈনিক সমকাল পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন মঞ্জু বলেন, রাষ্ট্রের অনেক উন্নয়ন হচ্ছে কিন্ত ভাবাদর্শগত দিকে পশ্চাদপদতা বাড়ছে। যার ফলে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি ও সাংস্কৃতিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। তিনি বলেন, এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় জাতীয় সংসদকে সকল সমস্যা আলোচনার কেন্দ্রে পরিণত করতে হবে। পাশাপাশি, নাগরিক সমাজকেও ঐক্যবদ্ধ হয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে।
নারীর মানবাধিকার দলিল হিসেবে জাতিসংঘ ১৯৭৯ সালে সিডও সনদ গ্রহণ করে। বাংলাদেশ সরকার ১৯৮৪ সালে ৪টি ধারার উপর সংরক্ষণ রেখে সিডও সনদ স্বাক্ষর করে। পরবর্তীতে নারী আন্দোলনের ফলে সরকার ২টি ধারার উপর সংরক্ষণ প্রত্যাহার করে নেয়। অন্য দুটি ধারার ওপর এখনও সংরক্ষণ তুলে নেয়নি সরকার। বক্তারা সনদের সংরক্ষণ প্রত্যাহার করে সিডও সনদের পূর্ণ অনুমোদনের জন্য সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার উপর জোর দেন।
ইউএন সিডও কমিটির প্রাক্তন সদস্য ফেরদৌস আরা বেগম বলেন, সিডও সনদের সাথে রাষ্ট্রের সমঝোতা অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। সিডও এর মূলদুটি ধারা ০২ এবং ১৬,১(গ) এর উপর এখনো সংরক্ষণ বহাল রেখেছে। তিনি বলেন সিডও সনদকে আইন হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। বিগত ৩৭ বছরে সরকারের বিভিন্ন দল দেশ পরিচালনা করছে কিন্তু সিডও সনদ বাস্তবায়নে সংরক্ষণ অব্যাহত রেখেছে, যা নারী পুরুষের সমতা ও নারী ক্ষমতায়নের পরিপন্থী । তিনি বলেন, বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ করে অগ্রযাত্রার পথ সুগম করতে হলে সিডও সনদ বাস্তবায়ন জরুরী।
বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর বলেন, পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা ও বৈষম্যমূলক নীতি পরিহার করে ন্যায্যতা ও সমতা প্রতিষ্ঠায় সিডও দলিল হলো একটা ইনস্ট্রুমেন্ট। সিডও সনদ বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষার মাধ্যমে সমাজকে প্রস্তুত করতে হবে। রাজনীতিবিদ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দায়বদ্ধ করতে হবে। শিক্ষক, পুলিশ প্রশাসনসহ জেন্ডার সেনসিটিভ সমাজ গড়ে তুলতে হবে।
ইউএনউইমেনের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ গীতাঞ্জলি সিং বলেন, বিশ্বজুড়ে জেন্ডার সমতা ও নারীর ক্ষমতায়নকে গুরুত্ব দিয়ে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হলেও গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট অনুসারে এখনো সমতা প্রতিষ্ঠায় নানা বৈষম্য আছে। সমতা প্রতিষ্ঠা করতে হলে অর্থনীতিতে নারীর অংশ গ্রহণ বৃদ্ধি, রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন, বৈষম্যমুক্ত পলিসি, জেন্ডার ডিসএগ্রিডেটেড ডাটা তুলে ধরার বিষয়ে জোর দিতে হবে।
এ্যাকশন এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবীর নারীর প্রকৃত রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সংখ্যা বৃদ্ধি করলে হবে না, গুণগত দিকের উপর গুরুত্ব দিতে হবে।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, সিডও সনদ সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণার সম্পূরক হিসেবে স্বীকৃত হলেও এই সনদ বাস্তবায়নে এখনো চ্যালেঞ্জ আছে। তিনি বলেন, দীর্ঘ নারী আন্দোলনের ফলে নারীর প্রতি বৈষম্যের মূল কারণটা চিহ্নিত হয়েছে। তা হলো, সাম্প্রদায়িকতা ও পিতৃতন্ত্র। তাই এখন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, আইনগত সমতা এবং বাস্তবায়ন এক কথা নয়। আফগানিস্তান সিডও সনদে পূর্ণ অনুমোদন দিয়েও সেদেশে নারীরা যে অবস্থায় রয়েছে সেদিক বিবেচনায় বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে। তাই, কেবল আইনগতভাবে থাকলেই হবে না, সিডও সনদের পূর্ণ বাস্তবায়নের দিকেও নজর দিতে হবে।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেমের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের আন্তর্জাতিক সম্পাদক দেবাহুতি চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, কেয়ার বাংলাদেশের উইমেন এন্ড গার্লস এমপাওয়ারমেন্ট প্রোগ্রামের পরিচালক হোমায়রা আজিজ ও বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সমন্বয়কারী ফাল্গুনী ত্রিপুরা। সভার শুরুতে সিডও কমিটির সাবেক চেয়ারপারসন সালমা খানের মৃত্যুতে শোকপ্রস্তাব পাঠ করেন লিগ্যাল এইড সম্পাদক রেখা সাহা।

বাংলাদেশ সময়: ২১:২৫:৪১   ৯৬ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


ঝিনাইদহে দুই বাসের সংঘর্ষ, আহত ১৫
সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন অনু কাপুর
নোয়াখালীতে সরকারি আবাসিক ফ্ল্যাটের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় চালু হচ্ছে আর্জেন্টিনার দূতাবাস
টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নাসিরের ঢাকা
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরসার কমান্ডারসহ গ্রেফতার ৫
বাজারে আসছে স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২৩ সিরিজের ফোন
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যপ্রাচ্য সফর শুরু
রবীন্দ্রনাথের গল্প ও সুর মানুষকে সঠিক পথ দেখিয়েছে - খাদ্যমন্ত্রী
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালকের শ্রদ্ধা

আর্কাইভ